মফিজ উদ্দিন তালুকদার(ময়মনসিংহ)।। ময়মনসিংহে পৃথকভাবে মিশুক চালক ও রিক্সাচালক খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ। পৃথক ২টি খুনের সঙ্গে জড়িতদের ৮ ঘন্টার মধ্যেই ৩জন পেশাদার ছিনতাইকারী কে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা ২৩ এপ্রিল রবিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, ঈদের দিন ভোরে নগরীর ডি এন চক্রবর্তী রোডে রিক্সার উপর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর গোহাইলকান্দি পশ্চিমপাড়া রাস্তার উপর রিক্সার পাশে অন্য আরেকজন রিক্সা চালকের রক্তাক্ত মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ কামাল আকন্দ পিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ ফারুক হোসেন,এসআই নিরুপম নাগ,এসআই শাহ মিনহাজ উদ্দিন,এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা, কং/৪৮০ জোবায়েদ হোসেন উপস্থিত হয়ে ক্রাইমসিন পর্যবেক্ষন, আলামত জব্দসহ প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।
এ খবর পেয়ে পুলিশ সুপার নিজে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারগণকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিকটিমদের পরিচয় সনাক্ত করেন। প্রথম ঘটনাস্থলের ভিকটিম হলেন, নিহত হাবিবুর রহমান (৫২) পিতা মোঃ আক্কাস আলী, সাং ভাটি বারেরার পাড়, থানা কোতোয়ালী জেলা ময়মনসিংহ। এবং দ্বিতীয় ঘটনাস্থলের ভিকটিম মোঃ সাদেক মিয়া (৩৫) পিতা চাঁন মিয়া, সাং শষ্যমালা,থানা কোতোয়ালী জেলা ময়মনসিংহ। একজন মিশুক চালক ও অন্যজন রিক্সা চালক।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, দুটি হত্যাকান্ডের ক্রাইমসিন পরিদর্শন, তথ্য প্রযুক্তি ও ঘটনার মোটিভ পর্যবেক্ষন করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ঘটনা দুটি একই গ্রুপ কর্তৃক সংগঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২২ এপ্রিল শনিবার বিকেলে নগরীর গোহাইকান্দি জামতলা ও কাশর তিন কোনা পুকুরপাড় থেকে পৃথক দুটি হত্যাকান্ডের ৮ ঘন্টার মধ্যে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, অনন্ত কুমার দে (১৯) পিতা ভজন কুমার দে, সাং-১২/৩ক গোয়ালকান্দি, মামুন (১৯) পিতা মোঃ খোকন জামতলা মসজিদসব সংলগ্ন নাসরিনের ভাড়াটিয়া ও কাজী মোঃ মাহিন বাদশা (১৯) পিতা কাজী মিল্লাত, সাং জামতলা বাইলেন গোয়ালকান্দি সর্ব থানা জেলা ময়মনসিংহ। এদের মধ্যে অনন্ত কুমার দে, এর বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ২০ তাং- ০৯-১২-২০২০, ধারা- ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ এ ধারার অস্ত্র মামলা চলমান রয়েছে। অন্য দুই আসামীর বিরুদ্ধে ও স্থানীয়ভাবে বিরুপ তথ্য পাওয়া যায় এবং তারা নেশাগ্রস্ত।
গ্রেফতারকৃরদের দেয়া তথ্য মতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু এবং তাদের পরিধেয় কাপড়ে লেগে থাকা রক্ত মাখা জামা কাপড় উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
তারা উভয় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসামীরা পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে রিক্সা ভাড়া করে কৌশলে তাদের কাঙ্খিত স্থানে নিয়ে একই ছুরি দিয়ে মিশুক চালক ও রিক্সাচালক ২ জনকেই হত্যা করে তাদের সাথে থাকা টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাঃ রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন, ফাল্গুনী নন্দী, কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ কামাল আকন্দ পিপিএম (বার) কোতোয়ালী মডেল থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত ফারুক হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক যানবাহন (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ডিআই ওয়ান আল মামুন সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply