মফিজ উদ্দিন তালুকদার(তারাকান্দা):ময়মনসিংহের তারাকান্দায় শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ,ঝরে পড়া রোধ এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তারাকান্দা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে ১৯শে ফেব্রুয়ারী(সোমবার) মাঝিয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী রোধে ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে নিয়মিত শতভাগ উপস্থিত রাখার জন্য এবং শিক্ষার মান ধরে রাখতে এই মা সমাবেশ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের সুযোগ্য উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট ফজলুল হক,২নং বানিহালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আলতাব হোসেন খন্দকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, তারাকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার জীবন আরা বেগম।
অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন,সহকারী কমিশনার (ভূমি)ফাহমিদা সুলতানা,তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)ওয়াজেদ আলী,উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা আক্তার কাকন,উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও মাঝিয়ালী ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার সঞ্জয় কুমার বনিক,মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মফিজ উদ্দিন তালুকদার,তারাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোকছেদুল ইসলাম, প্রথমিক শিক্ষক কামরুজ্জামান,রুহুল আমীন,মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া বেগম ও ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ,মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য মির্জা ফয়জুর রেজ্জাক বেগ(শরিফ),মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ,অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকাসহ অভিভাবক বৃন্দ।
তারাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক ও বালিজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওবায়দুল হক উক্ত অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
মা সমাবেশে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন,বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য মা’দের ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি আরো বলেন-ছাত্র ছাত্রীদের সরকার কর্তৃক যে উপবৃত্তি দেওয়া হয় তা যেনো সঠিক কাজে তথা ছাত্র ছাত্রীদের লেখা পড়ার কাজেই ব্যয় করা হয় সে ব্যাপারে সকলে সচেতন থাকতে হবে।ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক এবং অভিভাবকের সাথে যাতে সব সময় যোগাযোগ থাকে এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানান। এছাড়া সরকার কর্তৃক প্রদত্ত উপবৃত্তির টাকা যে মোবাইলে আসে, সেই একাউন্টের পাসওয়ার্ড নম্বর কাউকে না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বাল্যবিবাহ বন্ধে ও যৌতুক নিরোধে মায়েদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাগত বক্তা হিসেবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জীবন আরা বেগম তার বক্তৃতায় মা-কে শিশুর প্রথম শিক্ষক আখ্যা দিয়ে অপসংস্কৃতি থেকে নিজকে ও শিশুদের দূরে রেখে সন্তানদের প্রতি যত্নশীল হতে বলেন। একজন ভালো সন্তান এলাকার গর্ব আর দেশের সম্পদ। এসম্পদ রক্ষা করতে হলে সন্তানদের প্রতি নজর রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মেয়ে সন্তানদের অন্য দৃষ্টিতে দেখার কোন সুযোগ নেই । তাদেরকে কোন অংশ থেকে বঞ্চিত করলে নিজেই বঞ্চিত হবেন। তিনি ছেলে মেয়ে দুজনের প্রতি সমান সুযোগ দেওয়ার জন্য উপস্থিত মা-দের প্রতি আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিল আহমেদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার প্রথম হাতিয়ার হলেন মা। একজন মা পারেন তার সন্তানকে একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে।
বিশেষ অতিথি আলহাজ্ব এডভোকেট ফজলুল হক তার বক্তব্যে বলেন,বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে শিশুকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে তাদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক মায়েদের ভুমিকা রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন-শিশুকে মানুষ করতে হলে মা’কে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তার পাশে বসে থাকতে হবে। তার খোঁজ খবর রাখতে হবে। তবেই সে মানুষের মতো মানুষ হবে। বিশেষ অতিথি ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন খন্দকার বলেন,মা জ্ঞানী হলে তার সন্তানও জ্ঞানী হবেই। একজন শিক্ষার্থী প্রতিদিন স্কুলে আসলে তার মেধাশক্তি বৃদ্ধি পাবেই। মায়েদের অবশ্যই প্রতিদিন সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।
উক্ত সমাবেশে স্কুলের শিক্ষার্থীদের শতশত মায়েরা অংশ গ্রহণ করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠশালা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মফিজ উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে ঐদিন ম্যানেজিং কমিটির মাসিক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন ময়মনসিংহের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
পরিশেষে জেলা প্রশাসক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করেন।
Leave a Reply